Sunday, December 29, 2013

রংপুর জেলার ইতিহাস

তাজ হাট

রংপুর জেলা বাংলাদেশেরউত্তরাঞ্চলের এক ঐতিহ্যবাহী জনপদ। সুপ্রাচীনকাল থেকে এই জেলা গৌরবময় ওবৈচিত্র্যপূর্ণ ইতিহাসের অধিকারী। এর প্রায় ৮০ শতাংশ তিস্তার প্লাবন ভূমিএবং ২০ শতাংশ বরেন্দ্র ভূমির অন্তর্গত। এই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়েছেতিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, যমুনা, ধরলা প্রভৃতি নদ-নদী। হিন্দুধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী ভারতের পূর্বাংশ কামরূপ বা প্রাগজ্যোতিষ রাজ্যেরঅস্তিত্ব পাওয়া যায়, যার অন্তর্গত ছিল বর্তমান রংপুর তথা রঙ্গপুর অঞ্চল।রাজা ভগদত্তের সময় (খ্রিস্টপূর্ব ১৫শ' অব্দ) রংপুর প্রাগজ্যোতিষের অন্তর্গতছিল। আবার রাজা সমুদ্র গুপ্তের সময় (৩৪০ খ্রি.) কামরূপের করদরাজ্যেপরিগণিত হয়। পরবর্তীতে আবার এই অঞ্চল কোচবিহারের কিছু অংশ হিসেবে পরিচালিতহতো। ৪র্থ শতাব্দীর মধ্য থেকে এ অঞ্চল সর্বপ্রথম বর্মা রাজবংশেরঅন্তর্ভুক্ত হয়। কালক্রমে পালবংশ, সেনবংশ আরও অনেক রাজবংশ এখানে রাজত্বকরে।

আইন-ই-আকবরীর বিবরণ অনুযায়ী মোঘল রংপুর ৩ ধরনের প্রশাসনিক এলাকা নিয়েগঠিত ছিল। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে ঘোড়াঘাটে মোগলদের একটি ফৌজদারী হেড কোয়ার্টারস্থাপন করা হয়। একই স্থানে কাকিনা, কাজিরহাট, ফতেহপুর মোগলদের অধীনে আসেএবং ২৪ বছর পর ১৭১১ খ্রি. সমগ্র রংপুরে মোগল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে।অষ্টাদশ শতাব্দীর তিন দশকের শুরুতে মাহিগঞ্জে পর্যন্ত মোগল ইতিহাসের আরতেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি।
১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানী লাভের পর রংপুর নতুন ব্যবস্থায়ইংরেজ শাসনাধীন আসে। রংপুর অঞ্চলে সর্বপ্রথম ১৭৬৫ সালে কৃষক বিদ্রোহ দেখাদেয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবে বিদ্রোহী সিপাহীরা। এ অঞ্চলে ইংরেজ শাসকদেরমাঝে ত্রাসের সঞ্চার করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৩০ সালে রংপুরের বিভিন্নঅঞ্চলে সর্বপ্রথম কংগ্রেসের ডাকে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪৬খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর এখানে উত্তরবঙ্গের কৃষক নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়এবং নবেম্বরে তোভাগা আন্দোলন শুরু হয়।
কান্তাজির মন্দির
নামকরণের ইতিহাস : রংপুরের রঙ্গপুর নামকরণের কারণ নিয়ে এখনও চূড়ান্তসমাধান হয়নি। কেউ কেউ মনে করেন মহাভারতের সময়ে প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজাভগদত্তের রঙ মহল ছিল রংপুরে এবং সেই রঙ মহল হতে নাম হয়েছে রঙ্গপুর। কারোকারো মতে ভগদত্তের কন্যা পায়রাবতীর নামানুসারে নারী জাগরণের অগ্রদ্রুত বেগমরোকেয়ার জন্মভূমি পায়রাবন্দের নামকরণ হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন রংপুরেবস্ত্ররঞ্জনী কারখানা ছিল। পাট নির্মিত বস্ত্রে বা চটে রং করা হতো বলেরংপুরকে রংরেজপুর বলা হতো এবং তার পরিবর্তে হয়েছে রঙ্গপুর (রংপুর)। তবেঅনেক ঐতিহাসিক মনে করেন রংপুরের নামকরণের ক্ষেত্রে ইখতিয়ার উদ্দিনমুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজীর অবদান গ্রহণযোগ্য। রঙ্গপুর শব্দটি ফার্সিশব্দ। আর তাই সঙ্গত কারণে বখতিয়ার শাসন আমলেই রংপুরের নাম রঙ্গপুর হয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থান : রংপুর জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি ভৌগোলিক ওঐতিহাসিকভাবে ঐতিহ্যবাহী জনপদ। বর্তমানে এই জেলা ১৫০ ৩ র্ থেকে ৮৯০ ৩২ র্উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮০ ৫৭ র্ থেকে ৮৯০ ৩২ র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্তবিস্তৃত। রংপুর জেলার উত্তরে লালমনিরহাট, পূর্বে কুড়িগ্রাম, দক্ষিণ-পূর্বেগাইবান্ধা, উত্তর-পশ্চিমে নীলফামারী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে দিনাজপুর জেলাঅবস্থিত। তিস্তা নদীর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তকে লালমনিরহাট ওকুড়িগ্রাম জেলা থেকে পৃথক করেছে। রংপুর জেলার মোট আয়তন ২৩৬৭.৮৪ বর্গমিলোমিটার। ৮টি উপজেলা, ৮৩টি ইউনিয়ন, ৩টি পৌরসভা ও ১২১৪টি মৌজা নিয়ে জেলাটিগঠিত।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলী : ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবরকে সেনাপতি মানসিংহরংপুরের অংশ বিশেষ দখল করেন। ১৬৮৬ খ্রিস্টাব্দে রংপুর সম্পূর্ণভাবে মোঘলসম্রাজ্যভুক্ত হয়। আজও এ অঞ্চলে মোগল শাসনের স্মৃতি বহন করছে কুড়িগ্রামেরমোগলবাসা ও মোগলহাট। মোগল আমলে রংপুর ছিল ঘোড়াঘাট সরকারের অন্তর্ভুক্ত।‘বিয়াজুস সালাতীন' নামক ইতিহাস গ্রন্থে রঙপুর ঘোড়াঘাটের নাম পাওয়া যায়।কোম্পানি আমলে ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন ও প্রজা বিদ্রোহ এখানকারগুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা।
মুক্তিযুদ্ধ : স্বাধীনতাকামী রংপুরের মানুষ প্রথম যুদ্ধ শুরু করে ৩মার্চ। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ রংপুরের শংকু সমজদার। ৩ মার্চ ৩ জনেরপ্রাণ দানের মাধ্যমে শুরু হয় রংপুরের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে রংপুরেরসকল শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ৩ মার্চ থেকে ৫ মার্চ রংপুরে কারফিউ চলে।এ অঞ্চলের মানুষ সশস্ত্র যুদ্ধ আরম্ভ করে ২৪ মার্চ। ২৮ মার্চ রোববাররংপুরের মানুষ জেগে উঠেছিল এক নবচেতনায়। এদিন মানুষ লাঠিসোটা নিয়েক্যান্টনমেন্টে আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানী সৈন্যরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণজনগণের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। করেছে নির্মমভাবে অত্যাচার। রংপুর অসংখ্যমানুষ প্রাণ দিয়ে সৃষ্টি করে এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস।
গণকবর : দমদমা ব্রিজ, দমদমা বাজার (মিঠাপুকুর উপজিলা), আংরাজ ব্রিজ, মাদারগঞ্জ বাজার (পীরগঞ্জ উপজিলা)।
খনিজ সম্পদ : যে কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে খনিজ সম্পদের গুরুত্বঅপরিসীম। সে হিসেবে রংপুর জেলায় তেমন উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদ না থাকলেওপীরগঞ্জের খালাশপীরে কয়লা এবং মিঠাপুকুরের রানীপুকুরে তামার সন্ধান পাওয়াগেছে।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি : রংপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাহিত্যকর্ম, ভাষা ওসংস্কৃতি সুপ্রাচীন ও বিভাসিত। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের লীলানিকেতন এই রংপুর। বলা যায়, প্রকৃতির রহস্যময়তায় নান্দনিক সৌন্দর্যেপ্রকৃতির আদরনীয় হিল্লোলে ও প্রাণময়তায় ভরপুর রংপুর। অর্থাৎ‘রঙ্গরসে ভরপুরএই রঙ্গপুর'। এই রঙ্গরস শিক্ষা-সাহিত্য, সঙ্গীত, সংস্কৃতি ইতিহাস-ঐতিহ্যবিশেষ করে লোকসংস্কৃতি মিলিয়ে অনবদ্য। রঙ্গপুরের পরিবর্তিত রূপ রংপুর।বাংলাদেশের প্রাচীনতম অংশের নাম বন্দ্রে বা বরেন্দ্রী। রংপুর সমতল বরেন্দ্রঅঞ্চলের অন্তর্গত। পরবর্তী সময়ে যে অঞ্চল গৌড় অঞ্চল বলে পরিচিতি লাভ করে।
প্রাচীন নিদর্শনাবলী ও দর্শনীয় স্থান : কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজভবন, পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার বাড়ি, মন্থনার জমিদার বাড়ি, কেরামতিয়া মসজিদ, রংপুর যাদুঘর, মাওলানা কারামাত আলী জৈনপুরী (রহ.)-এর মাযার, হযরত শাহজালালবোখারীর মাযার, তাজহাট জমিদার বাড়ি, কুতুব শাহের মাজার, রায়পুর জমিদারবাড়ি, পাটগ্রামে রাজা নীলাম্বরের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, চন্দনহাট হরি মন্দির, ডিমলা রাজ কালী মন্দির ও মিঠাপুকুর যা মোগল আমলে খনন করা হয়েছে।

রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম

হাড়িভাংগা আম
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এর প্রায় ৮৫% নাগরিক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত । কৃষিজাত দ্রব্য যেমন ধান, পাট, আখ, গম, ভুট্রা, শাক-সবজি প্রভৃতির পাশাপাশি নানা রকম ফলদ বৃক্ষের চাষও এ দেশে করা হয়ে থাকে । আবহাওয়া, জমি ও অঞ্চলভেদে বিশেষ বিশেষ ফল যেমন আম, কাঁঠাল, আনারস প্রভৃতি উৎপাদন হারের তারতম্য লক্ষ্য করা যায় । ফলের জগতে মিষ্টি, সুস্বাদু ও রসাল ফল হিসেবে আমের আধিক্য ও জনপ্রিয়তা সবার শীর্ষে । রসনার পরিতৃপ্তি, শরীরের পুষ্টি যোগান, পরিবেশবান্ধব ও জাতীয় অর্থনীতিতে আমের অবদান অনস্বীকার্য । বাংলার মানুষের প্রিয় আম লেংড়া, ফজলি, গোপালভোগ, হিমসাগর, আশ্বিনাসহ আরো বহু প্রজাতির আম রয়েছে । ঐতিহ্যবাহী আম সমূহের পাশাপাশি বাংলার মাটিতে বিপুল সম্ভাবনাময় অপর আরেকটি আমের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এবং ইতিমধ্যে দেশে-বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করেছে যার নাম “হাড়িভাঙ্গা” ।রংপুর এর মিঠাপুকুর উপজেলার ১০নং বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের আখিরাহাট সংলগ্ন খামারবাড়ীতে এ আমটির চাষ, ফলন ও সম্প্রসারণে পরিণত বয়সেও যে ব্যক্তিটি নিরলস ও অনবদ্য শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তিনি হলেন জনাব আলহাজ্ব মোঃ আব্দুস সালাম সরকার ।

শ্রদ্ধেয় জ্যাঠা সহর উল্লাহ সরকার এর উৎসাহ-উদ্দীপনায় জনাব মোঃ আব্দুস সালাম সরকার ছাত্র জীবনের মতই চাকুরী জীবনেও বৃক্ষরোপণে অত্যন্ত আগ্রহী ও নিবেদিত ছিলেন । সরকারী চাকুরীর সুবাদে ঠাকুরগাঁও জেলায় থাকাকালীন জেলা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর পশ্চিম তীরবর্তী গোবিন্দ নগর হিমাগার সংলগ্ন ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় ইক্ষু চাষী সমবায় সমিতি প্রাঙ্গণে তিনি আম, কাঁঠাল ও নারিকেল গাছ এর চারা রোপণ করেন যা স্মৃতিচারণের উপাদান হয়ে আজও শোভাবর্ধন করছে । চাকুরীরত অবস্থায় ১৯৮৪-৮৫ইং সালে লাগানো কয়েক শত ফলদ ও বনজ ঔষধী গাছ বিভিন্ন কারণে বিনষ্ট হলে মাঠে সার্বক্ষণিক তিনি নিজের উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন । ইতিমধ্যে চাকুরী জীবনের প্রায় ৩০ বছর কেটে যায় । বৃক্ষ রোপণে অবদান রাখার জন্য সরকার কর্তৃক একাধিকবার পুরস্কার পাওয়ায় স্বেচ্ছায় অবসরে যেয়ে বৃক্ষরোপণে আরো সময় ও মনোনিবেশ করার মনস্থ করেন । এরই ধারাবাহিকতায় চাকুরী পূর্তির ০৮ বছর পূর্বেই ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করে স্বপ্ন পূরণে মাঠে নেমে পড়েন । এমতাবস্থায় “হাড়িভাঙ্গা” নামে পরিচিত একটি আমের প্রশংসা শুনে তিনি কিছু আম সংগ্রহ করেন এবং সত্যিকার অর্থেই আমটি এত সুস্বাদু যে এটি তাকে আন্দোলিত করে । তাৎক্ষণিক আমটির তথ্য সংগ্রহে তিনি বের হয়ে পড়েন এবং মিঠাপুকুর উপজেলার ১নং খোরাগাছ ইউনিয়নের তেকানী গ্রামের মৃত নফল উদ্দিন পাইকার, পিতা মৃতঃ তমির উদ্দিন পাইকার এর বাড়ীতে উপস্থিত হন যিনি মূলতঃ এ আমটি উদ্ভাবন করেন । ব-দ্বীপ সাদৃশ ত্রিকোণাকৃতি তেকানী গ্রামের এক কোণে মেঠো রাস্তা সংলগ্ন পশ্চিমে আধুনিক নকশার সুন্দর একটি মসজিদ এবং এর উত্তর-পশ্চিম কোণে প্রায় ১০০ ফুট দূরত্বে সনামধন্য সেই “হাড়িভাঙ্গা” আমের মূল/মাতৃ গাছটি মাথা উঁচু করে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে । গাছটির বেড় প্রায় ১০ ফুট, মূল কান্ডের উচ্চতা ৬ ফুট এবং তদুর্দ্ধ্বে মোটা মোট ডালপালা গাছটির চারপাশে প্রায় ৩৫/৩৬ ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত ।

ইতিহাস থেকে (আলহাজ্ব মোঃ আব্দুস সালাম সরকার) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত জমিদার বাড়ীর বাগানে প্রজাবাৎসল, উদারমনা ও সৌখিন রাজা তাজ বাহাদুর শিং এর আমলে আমদানিকৃত ও রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির সুগন্ধিযুক্ত ফুল ও সুস্বাদু ফলের বাগান ছিল যা ১৯৮৮ সালের বন্যা ও ভাঙ্গনে যমুনেশ্বরী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় । ১নং খোরাগাছ ইউনিয়নের তেকানী গ্রামের মৃত নফল উদ্দিন পাইকার, পিতা মৃতঃ তমির উদ্দিন পাইকার আমের ব্যবসা করতেন । তিনি জমিদারের বাগানসহ অন্য আম চাষীদের আম পদাগঞ্জসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রি করতেন । জমিদার বাগানের আমদানীকৃত আমের মধ্যে একটি আম অত্যন্ত সুস্বাদু, সুমিষ্ট ও দর্শনীয় হওয়ায় তিনি উহার একটি কলম (চারা) নিয়ে এসে নিজ জমিতে রোপন করেন । বরেন্দ্র প্রকৃতির জমি হওয়ায় শুকনো মৌসুমে গাছের গোড়ায় পানি দেয়ার সুবিধার্থে একটি হাড়ি বসিয়ে ফিল্টার পদ্ধতিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করেন কিন্তু অল্পদিনের ব্যবধানে কে বা কারা উক্ত হাড়িটি ভেঙ্গে ফেলেন । কালের বিবর্তনে বৃক্ষটি ফলবান ‍বৃক্ষে পরিণত হয় । মৃত নফল উদ্দিনের পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ও ভোক্তাবৃন্দ উক্ত গাছের আম খাওয়ার পর এত সুস্বাদু আমের উৎস সম্বন্ধে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কে বা কারা যে গাছটির হাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছিল এটি সেই গাছেরই আম । গাছকে সনাক্তকরণের লক্ষ্যে নফল উদ্দিন কর্তৃক উচ্চারিত বা মুখ নিঃসৃত হাড়িভাঙ্গা কথার সূত্র ধরেই পরবর্তীতে এটি “হাড়িভাঙ্গা” নামে পরিচিত লাভ করে ।

০৭ জুলাই, ২০১০ সালে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান পরিদর্শন শেষে রংপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক জনাব বি.এম. এনামুল হক মহোদয়ের ভাষায়-“বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির আমের মধ্যে নতুন সংস্করণ “হাড়িভাঙ্গা” । নামের দিক থেকে তেমন সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলেও স্বাদে-গন্ধে আমটি অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত” ।

হাড়িভাঙ্গা আম গাছের চেহারা লক্ষ্যণীয় ও আকর্ষণীয় । ডগা বা ছায়ন পূষ্ট ও বলিষ্ঠ । উহার ছায়ন দ্বারা গ্রাফটিং করলে বা ডালে জোড়কলম লাগালের গাছ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায় । অল্প দিনের মধ্যে ডালপালা বিস্তৃত হয়ে গাছের পরিধি লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়ে যায় । চারা রোপনের পরবর্তী বছরেই মুকুল আসে, তবে প্রথম বছরে মুকুল ভেঙ্গে দিলে গাছের ডগার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ও বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে । হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা উর্ধ্বমূখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশী বিস্তৃত হতে দেখা যায় । ফলে উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়েনা এবং আমও কম ঝড়ে পড়ে । আমটির উপরিভাগ বেশী মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ অপেক্ষাকৃত চিকন । আমটি দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা । আমের তুলনায় শ্বাস অনেক ছোট, ভিতরে আঁশ নেই । আকারের তুলনায় অন্য আমের চেয়ে ওজনে বেশী, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয় । কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০/৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুষ্ট আম বেশী দিন অটুট থাকে । চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না । ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত একেক স্তরে একেক স্বাদ পাওয়া যায় । তবে আমটি খুব বেশী না পাকানোই ভাল ।

আম জাতীয় স্বাস্থ্য বিনির্মাণে অবদান রাখতে সক্ষম । তদুপরি আম বাগান পরিবেশ বান্ধবও বটে । সম্ভাবনাময় হাড়িভাঙ্গা আম চাষ ও আম শিল্পকে আরো আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবী রাখে । প্রচারেই প্রসার-এ দৃষ্টিকোণ থেকে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে হাড়িভাঙ্গা আমকে আরো জনপ্রিয়, গতিশীল এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মিডিয়ার সক্রিয় ভূমিকা অতীব প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ ।

রংপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫০

ডিসেম্বর ২৯, রংপুর: নগরীর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামুসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ ও গুলিতে ১০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ  সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা একটি প্রাইভেট কারসহ পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
রোববার বেলা ১টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হলেও বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ থেমে থেমে চলছে। সংঘর্ষ এখন নগরীর পায়রাচত্বর থেকে শুরু করে  সিটি বাজারসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
 প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১টার দিকে রংপুর নগরীর গ্রান্ডহোটেল এলাকায় অবস্থিত বিএনপি কার্যালয় থেকে একটি জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সামনে আসলে সেখানে পর পর দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে ফাকা গুলি করলে বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ আর গুলি শুরু করলে পুলিশের গুলিতে ১০ বিএনপিকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয় জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামু, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাব উদ্দিন খলিফাসহ পাঁচ পুলিশসহ ৫০ জন আহত হন। এ ঘটনার পর নগরীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে আর ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের করার চেষ্টা করছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাব উদ্দিন খলিফা জানান, ১৮ দলের নেতাকর্মীরা নাশকতার চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ পাঁচপুলিশ আহত হয়েছি।

Thursday, December 26, 2013

আফতাব আহমদের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি আডিজেএ’র

রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির নেতারা
স্টাফ রিপোর্টার: একুশে পদকপ্রাপ্ত ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমদের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত দাবী জানিয়েছে রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধ কর্মর্সূচিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব আব্দুল জলিল, ডিইউজের সভাপতি ওমর ফারুখ, প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আলহাজ জহিরুল হক, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুবদী আহমেদ সাধারণ সম্পাদক কেরামত উল্লাহ বিপ্লব প্রমুখ। 
বক্তারা বলেন, একেরপর এক সাংবাদিককে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু এর বিচার হচ্ছে না। অপরাধীরাও ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। যা খুবই উদ্বেগ জনক। বক্তারা বলেন, অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। 
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিজ বাসভবন থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে রামপুরা থানা পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে টাকা লুট ও ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিকতায় আফতাব আহমদ এক অনন্য নাম। ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ছাড়াও তিনি ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারিও ছিলেন। 

Wednesday, December 25, 2013

এক নজরে ফটোসাংবাদিদক আফতাব আহমদ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর: প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমদ খুন হয়েছেন।  আজ বুধবার সকালে রাজধানীর ৬৩ পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোডের নিজ বাসায় তার হাত-পা বাঁধা লাশ পাওয়া যায়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মো. মারুফ হাসান সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আফতাব আহমদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সম্প্রতি তা বিক্রি করা হয়েছে। এবং বেশ কয়েক লাখ টাকা বাসায় পাওয়া গেছে। এ টাকার জন্যই দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।
রামপুরা থানার ডিউটি অফিসার জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করছে পুলিশের একটি টিম। সিআইডি এবং ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে আছেন।

১৯৩৪ সালে রংপুরের গঙ্গাচরা থানায় মহিপুরে জন্মগ্রহণ করেন আফতাব আহমদ। তিনিদৈনিক ইত্তেফাক-এর ফটোসাংবাদিক ছিলেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর তিনি ইত্তেফাক থেকে অবসর নেন। 

রামপুরা থানার ওসি (তদন্ত) নাসিম আহমেদ রাইজিংবিডিকে জানান, ওই বাসায় আফতাব আহমদ একাই থাকতেন।

তার মেয়েজামাই ফারুক সকাল নয়টার দিকে পুলিশে খবর দেন। এর আগে বাসার কাজের বুয়া নাসিমার মাধ্যমে তারা আফতাব আহমদের মৃত্যুর খবর পান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ফারুক।

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় কুড়িগ্রামের বাসন্তীর ছবি তুলে আফতাব আহমেদ দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছিলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকও লাভ করেছিলেন কৃতী এ সাংবাদিক।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। স্ত্রী মারা গেছেন সাত বছর আগে। ছেলে মনোয়ার থাকেন যশোরে। মেয়ে আফরোজা স্বামীর সঙ্গে থাকেন গাজীপুরে। এই বাসায় তিনি একাই বসবাস করতেন। কাজের বুয়া নাসিমা ও ড্রাইভার কবির ছাড়া আশপাশের আর কেউ ওই বাসায় তেমন একটা যাতায়াত করত না। ঘটনার পর থেকে ড্রাইভার কবিরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সাংবাদিক আফতাব আহমদেকে হত্যার ঘটনায় ডিসিজেএ’র নিন্দা


ফটো সাংবাদকি আফতাব আহমেদ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর: একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান ফটো সাংবাদকি আফতাব আহমদেকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গভীর শোক ও নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি (ডিসিজেএ)। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে সংগঠনটি।
বুধবার ডিসিজেএ’র সভাপতি যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
ডিসিজেএ নেতারা মনে করেন, ফটো সাংবাদিকতায় অনন্য নজির  স্থাপনকারী আফতাব আহমদেকে হত্যার মাধ্যমে হত্যাকারীরা প্রমাণ করেছে,  সংবাদর্কমীরা কতো বড় ঝুঁকিতে আছনে। অপরাধী যে বা যারাই হোক, তাদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় না আনলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, আফতাব আহমেদকে হারিয়ে দেশের সাংবাদিক সমাজ একজন যোগ্য অভিভাবককে হারিয়েছে। তার অভাব কোনোভাবেই পূরণ হবার নয়। একই সঙ্গে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন ডিসিজেএ নেতৃবৃন্দ। 



বঙ্গবন্ধু সরকারের ভিত নাড়িয়ে দেয়া আফতাব আহমেদ এর সেই ছবি


ডানে বোবা বাসন্তী, ইনসেটে আফতাব আহমেদ
ঢাকা: ১৯৭৪ সালে কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের খবর সংগ্রহের জন্য যান দৈনিক ইত্তেফাকের দুই সাংবাদিক। রিপোর্টার শফিকুল কবির সেই অ্যাসাইনমেন্টে একজন ফটো সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে যান।
ফিরে সেই ভয়বহতার চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন লেখেন রিপোর্টার। সেটি খুব গুরুত্ব দিয়ে ছাপাও হয়। সে সংবাদটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু প্রতিবেদনটি যতোটা সাড়া ফেলতে পেরেছিল তার চেয়েও বেশি নজর কেড়েছে সেটির সঙ্গে ছাপা ছবিটি। এ ছবিটিই প্রশাসনের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিল।
সেই ছবিতে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা প্রকাশ পেয়েছিল প্রকটভাবে। এক জেলে পরিবারের বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে বাসন্তীর মাছ ধরার জাল পরে লজ্জা নিবারণের চেষ্টা- সেই দৃশ্যই বলে দিচ্ছিল উত্তরাঞ্চলের দুর্ভিক্ষের করুণ চিত্র।
তুমুল আলোচিত এই ছবিটিই ধারণ করেছিলেন আফতাব আহমেদ। এই এক ছবি দিয়েই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারকে রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দিয়েছিলেন এই অকুতোভয় ফটোগ্রাফার।
সেই আফতার আহমেদকে বুধবার ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই শোকের দিনে জাল পরা বাসন্তীর বিখ্যাত ছবিটি তার স্মরণে 'রংপুর ন্মিউজ' এর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।