Thursday, December 26, 2013

আফতাব আহমদের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি আডিজেএ’র

রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির নেতারা
স্টাফ রিপোর্টার: একুশে পদকপ্রাপ্ত ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমদের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত দাবী জানিয়েছে রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধ কর্মর্সূচিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব আব্দুল জলিল, ডিইউজের সভাপতি ওমর ফারুখ, প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আলহাজ জহিরুল হক, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুবদী আহমেদ সাধারণ সম্পাদক কেরামত উল্লাহ বিপ্লব প্রমুখ। 
বক্তারা বলেন, একেরপর এক সাংবাদিককে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু এর বিচার হচ্ছে না। অপরাধীরাও ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। যা খুবই উদ্বেগ জনক। বক্তারা বলেন, অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। 
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিজ বাসভবন থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে রামপুরা থানা পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে টাকা লুট ও ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিকতায় আফতাব আহমদ এক অনন্য নাম। ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ছাড়াও তিনি ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারিও ছিলেন। 

Wednesday, December 25, 2013

এক নজরে ফটোসাংবাদিদক আফতাব আহমদ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর: প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমদ খুন হয়েছেন।  আজ বুধবার সকালে রাজধানীর ৬৩ পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোডের নিজ বাসায় তার হাত-পা বাঁধা লাশ পাওয়া যায়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মো. মারুফ হাসান সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আফতাব আহমদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সম্প্রতি তা বিক্রি করা হয়েছে। এবং বেশ কয়েক লাখ টাকা বাসায় পাওয়া গেছে। এ টাকার জন্যই দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।
রামপুরা থানার ডিউটি অফিসার জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করছে পুলিশের একটি টিম। সিআইডি এবং ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে আছেন।

১৯৩৪ সালে রংপুরের গঙ্গাচরা থানায় মহিপুরে জন্মগ্রহণ করেন আফতাব আহমদ। তিনিদৈনিক ইত্তেফাক-এর ফটোসাংবাদিক ছিলেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর তিনি ইত্তেফাক থেকে অবসর নেন। 

রামপুরা থানার ওসি (তদন্ত) নাসিম আহমেদ রাইজিংবিডিকে জানান, ওই বাসায় আফতাব আহমদ একাই থাকতেন।

তার মেয়েজামাই ফারুক সকাল নয়টার দিকে পুলিশে খবর দেন। এর আগে বাসার কাজের বুয়া নাসিমার মাধ্যমে তারা আফতাব আহমদের মৃত্যুর খবর পান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ফারুক।

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় কুড়িগ্রামের বাসন্তীর ছবি তুলে আফতাব আহমেদ দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছিলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকও লাভ করেছিলেন কৃতী এ সাংবাদিক।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। স্ত্রী মারা গেছেন সাত বছর আগে। ছেলে মনোয়ার থাকেন যশোরে। মেয়ে আফরোজা স্বামীর সঙ্গে থাকেন গাজীপুরে। এই বাসায় তিনি একাই বসবাস করতেন। কাজের বুয়া নাসিমা ও ড্রাইভার কবির ছাড়া আশপাশের আর কেউ ওই বাসায় তেমন একটা যাতায়াত করত না। ঘটনার পর থেকে ড্রাইভার কবিরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সাংবাদিক আফতাব আহমদেকে হত্যার ঘটনায় ডিসিজেএ’র নিন্দা


ফটো সাংবাদকি আফতাব আহমেদ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর: একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান ফটো সাংবাদকি আফতাব আহমদেকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গভীর শোক ও নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি (ডিসিজেএ)। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে সংগঠনটি।
বুধবার ডিসিজেএ’র সভাপতি যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
ডিসিজেএ নেতারা মনে করেন, ফটো সাংবাদিকতায় অনন্য নজির  স্থাপনকারী আফতাব আহমদেকে হত্যার মাধ্যমে হত্যাকারীরা প্রমাণ করেছে,  সংবাদর্কমীরা কতো বড় ঝুঁকিতে আছনে। অপরাধী যে বা যারাই হোক, তাদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় না আনলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, আফতাব আহমেদকে হারিয়ে দেশের সাংবাদিক সমাজ একজন যোগ্য অভিভাবককে হারিয়েছে। তার অভাব কোনোভাবেই পূরণ হবার নয়। একই সঙ্গে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন ডিসিজেএ নেতৃবৃন্দ। 



বঙ্গবন্ধু সরকারের ভিত নাড়িয়ে দেয়া আফতাব আহমেদ এর সেই ছবি


ডানে বোবা বাসন্তী, ইনসেটে আফতাব আহমেদ
ঢাকা: ১৯৭৪ সালে কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের খবর সংগ্রহের জন্য যান দৈনিক ইত্তেফাকের দুই সাংবাদিক। রিপোর্টার শফিকুল কবির সেই অ্যাসাইনমেন্টে একজন ফটো সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে যান।
ফিরে সেই ভয়বহতার চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন লেখেন রিপোর্টার। সেটি খুব গুরুত্ব দিয়ে ছাপাও হয়। সে সংবাদটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু প্রতিবেদনটি যতোটা সাড়া ফেলতে পেরেছিল তার চেয়েও বেশি নজর কেড়েছে সেটির সঙ্গে ছাপা ছবিটি। এ ছবিটিই প্রশাসনের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিল।
সেই ছবিতে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা প্রকাশ পেয়েছিল প্রকটভাবে। এক জেলে পরিবারের বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে বাসন্তীর মাছ ধরার জাল পরে লজ্জা নিবারণের চেষ্টা- সেই দৃশ্যই বলে দিচ্ছিল উত্তরাঞ্চলের দুর্ভিক্ষের করুণ চিত্র।
তুমুল আলোচিত এই ছবিটিই ধারণ করেছিলেন আফতাব আহমেদ। এই এক ছবি দিয়েই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারকে রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দিয়েছিলেন এই অকুতোভয় ফটোগ্রাফার।
সেই আফতার আহমেদকে বুধবার ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই শোকের দিনে জাল পরা বাসন্তীর বিখ্যাত ছবিটি তার স্মরণে 'রংপুর ন্মিউজ' এর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।