Saturday, January 4, 2014

হরতাল অবরোধে অচল রংপুর ৬টি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ

রংপুর ব্যুরো : টানা অবরোধের চতুর্থ দিনে ও নির্বাচন বাতিলের দাবিতে দেয়া হরতালের প্রথম দিনেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুর। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে রংপুর মহানগরী ও পীরগঞ্জের ছয়টি ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও শনিবার সকালে নগরীতে ইসলামী ছাত্রশিবির ককটেল ফাটিয়ে বিক্ষোভ সড়ক অবরোধ করে। মিঠাপুকুরেও রাতে ৩০টির মতো ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে।

অবরোধের সঙ্গে রংপুরে শনিবার ভোর ছয়টা থেকে যোগ হয়েছে কেন্দ্রীয় ভাবে ৪৮ ঘণ্টা ও স্থানীয় আঠারো দলের ৩৬ ঘণ্টার হরতাল। অবরোধের কারণে  দুরপাল্লা, আন্ত:জেলা ও উপজেলা রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।

আর হরতারে কারণে নগরীতে দোকানপাট বন্ধ আছে। সীমিত পরিমাণে কিছু রিকশা, অটোরিকশা চলতে দেখা যাচ্ছে। এদিকে নির্বাচন প্রতিহত করতে শুক্রবার দিবাগত ভোর রাতে ১৮ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা রংপুর মহানগরীর মুলাটোল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মাহিগঞ্জ মহিন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্টেশন পীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পীরগঞ্জের ভেন্ডাবাড়ি ভীম শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় আলমপুর ইউনিয়নের পত্নীচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভষ্মিভূত হয়েছে। অন্যদিকে সকালে ইসলামী ছাত্রশিবির মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা নগরীর পায়রা চত্বর, উত্তম, তাজহাট এলাকায় সড়কে গাছের গুড়ি ইট পাটকেল, ও পেট্রোলে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। এসময় তারা যেকোনো মূল্যে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এসময় সেখানে ১০টিরও বেশি ককটেল ফাটায় তারা।

এছাড়াও শুক্রবার রাতে মিঠাপুকুরের দুলাহপুর, জায়গীর, বৈরিগঞ্জ, গড়ের মাথাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৩০ টির বেশি ককটেল ফাটিয়ে  আতংক তৈরি করে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।

এছাড়া সকাল থেকেই বিএনপি, জামায়াত, শিবিরসহ আঠারো দলীয় জোট নেতাকর্মীরা নগরীর বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রান্ড হোটেল মোড়, মডার্ন মোড়, সাতমাথা, জাহাজ কোম্পানি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় মিছিল মিটিং ও পিকেটিং করার প্রস্তুতি নিলেও আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে তারা মাঠে নামতে পারছে না।

এদিকে যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে নগরীসহ আশেপাশের প্রতিটি উপজেলায় বিপুল পরিমাণ বিজিবি, র্যা ব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও নগরীতে অবিরাম টহল দিচ্ছে।

বিরোধী দলের অবরোধ হরতাল আর নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা আর অন্যদিকে সরকারের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কারণে উভয়পক্ষই এখন মারমুখী অবস্থানে আছে। সাধারণ মানুষ যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বাসা বাড়িতেই অবস্থান করছেন। ফলে সকাল থেকেই নগরীতে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।

পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভোটকেন্দ্রসহ নগরী ও আশেপাশের সকল উপজেলায় আইন শৃংখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে। কেউ নাশকতা করতে চাইলে তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে।
এদিকে নগরীর বাইরে উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পালন হচ্ছে অবরোধ ও হরতাল। গ্রামগঞ্জেও তেমন কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। গ্রামের মানুষজনের মধ্যেও আতংক বিরাজ করছে।

No comments:

Post a Comment