Monday, January 27, 2014

এমপি হওয়ার পথে শিরিন শারমিন

রংপুর: তিনি যখন জাতীয় সংসদের স্পিকার মনোনীত হন তখন বেশ সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়্। তিনি যেহেতু সরাসরি জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি নন তাই তার এই পদে যাওয়ার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কেউ কেউ। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদের মূল ৩০০ আসনের একটিই জিতছেন।
সোমবার নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময় অনুসারে রংপুর-৬ আসনে জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন শিরিন শারমিন চৌধুরী। এসময় ওই আসনে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য আর কোনো মনোনয়ন জমা পরেনি।
নির্বাচন কমিশনের আইন অনুসারে শিরিন শারমিনের মনোনয়নে কোনো ক্রটি না থাকলে পরশু তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করতে কমিশনের আর কোনো বাধা থাকবে না। তাই এই অবস্থায় বলা যায় শিরিন শারমিন চৌধুরী রংপুর-৬ আসনের নতুন সংসদ সদস্য।
প্রসঙ্গত রংপুর-৬ আসনে মূল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে শেখ হাসিনা নির্বাচিত হন। সেই সাথে তিনি গোপালগঞ্জ -৩ আসনে নির্বাচিত হন। শপথ গ্রহণের পরে প্রধানমন্ত্রী রংপুর-৬ আসন ছেড়ে দিলে সেটি শুন্য হয়।
তবে মূল আসনের সংসদ সদস্য হলে এবারও শিরিন শারমিন পাচ্ছেন না সরসরি ভোটের স্বাদ। তাই সরসরি নির্বাচনে সাংসদ হওয়ার আক্ষেপ তার রয়েই যাচ্ছে।
শিক্ষা জীবনে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখানো শিরিন শারমিনের জন্ম ১৯৬৬ সালে ৬ অক্টোবর ঢাকায়। তার বাবা রফিকউল্লাহ চৌধুরী ছিলেন স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব। তার মা অধ্যাপক নাইয়ার সুলতানা বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সদস্য ছিলেন। তার নানা সিকান্দার আলী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হাই কোর্টের বিচারপতি।
১৯৮৩ সালে ঢাকা বোর্ড থেকে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার এসএসসি পাস করেন শিরিন। দুই বছর পর একই বোর্ড থেকে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান নিয়ে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি।
১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল এল বি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে ওই স্থান অটুট রেখেই এলএলএম ডিগ্রি নেন শিরিন শারমিন।
এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। ২০০০ সালে এসেক্স ইউনিভার্সিটি ‘রাইট টু লাইফ’ অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি পিএইচডি লাভ করেন।
১৯৯২ সালে বার কাউন্সিল আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন শিরিন। ১৯৯৪ সালে হাই কোর্ট বিভাগ ও ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আইনজীবীদের একজন তিনি।
শিরিন শারমিন ২০০৩ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল লিগাল ডিভিশনের এডিটর ছিলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্সের (বিলিয়া) নির্বাহী কমিটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য তিনি।
আইনজীবী হিসাবে পেশাগত জীবনে নারীর সম-অধিকারের জন্য কাজ করে আসছেন শিরিন শারমিন। তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায়ই ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ সংসদে পাস হয়।
শিরিন শারমিনের স্বামী ওষুধ শিল্পের পরামর্শক সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।

No comments:

Post a Comment